বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে যে কারণে প্রত্যাখ্যান করলো অস্ট্রিয়া

বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে অস্ট্রিয়া সরকার কূটনীতিক তৌহিদুল ইসলামকে গ্রহণ না করার জন্য তাঁরই সহকর্মীদের দুষছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। সেই সঙ্গে গণমাধ্যমকেও দুষেছেন তিনি।

আজ শনিবার সকালে সিলেট শহরতলির চাঁনপুর খেয়াঘাট এলাকায় সুরমা নদীর খননকাজ উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন।

কাতারে চাকরি খুঁজছেন? এখানে ক্লিক করুন

কূটনীতিক তৌহিদ প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সারা দেশে একটা চরিত্রের প্রচলন ঘটেছে। আমরা খালি মানুষকে নিচে নামানোর জন্য উঠেপড়ে লাগি।’

‘কিছু মানুষের চরিত্রই হচ্ছে অন্যের ভালো না চাওয়া। আর আমাদের মিডিয়াও ওই লাইনেই আছে। ওপরে ওঠানোর চেষ্টা কেউ করে না, শুধু নামানোর চেষ্টা করে।’

কূটনীতিক মো. তৌহিদুল ইসলামকে অস্ট্রিয়া সরকার রাষ্ট্রদূত হিসেবে গ্রহণ না করার পেছনে তাঁর মন্ত্রণালয়ের সহকর্মীরা জড়িত থাকলেও তিনি আজীবন তাঁরই পক্ষ অবলম্বন করে যাবেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

কাতারের সব খবর হোয়াটসঅ্যাপে পেতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

কূটনীতিক মো. তৌহিদুল ইসলামের ব্যাপক প্রশংসা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি ভেরি গুড অফিসার এবং তুখোড় ছেলে।’

তৌহিদুল ইসলামকে নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে সে (তৌহিদুল) আমাদের অ্যাম্বাসেডর ইন সিঙ্গাপুর। তাকে আমরা ভিয়েনাতে দিতে চাই।’

‘সে যখন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ পরীক্ষা দেয়, তখন সারা বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম হয়। তারপরে সে তার ব্যাচের ফার্স্ট বয় ছিল। অত্যন্ত ভালো, তুখোড় ছেলে। এখন ওরে টেনে কীভাবে নামানো যায়, তার জন্য মন্ত্রণালয়ের লোকজন, তারই বন্ধুবান্ধবেরা কন্টিনিউয়াসলি চেষ্টা করে।’

মন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশ চারটা বড় বড়, ইউএনতে (জাতিসংঘ) চারটা বড় রিকগনিশন নেয়। একটা হচ্ছে শান্তি ও সংস্কৃতি।’

‘আর দুটো বড়, একটা হচ্ছে অটিজমের ওপর এবং আরেকটি হচ্ছে মানুষের ক্ষমতায়ন। এই দুটোতে এই ছেলে (তৌহিদুল) প্রথম কাউন্সিলর ছিল ইউএনে এবং সে অসম্ভব তুখোড় ছেলে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু তার (তৌহিদুল) শত্রু আছে। শত্রু ওখানে গিয়ে, সে যখন মিলানে কনসাল জেনারেল ছিল, কনসাল জেনারেল থাকা অবস্থায় কোনো একটা মেয়েকে তার পেছনে লাগিয়ে দেয়। লাগিয়ে দিয়ে একটা কেলেঙ্কারির চেষ্টা করে।’

‘তখন তাকে উইথড্র করা হয়, সাসপেন্ড করা হয়, অনেক ইনভেস্টিগেশন করা হয়, সরকারের অনেক টাকা, আপনাদের টাকা খরচ করা হয়। পরে দেখা যায় একেবারে বানোয়াট।’

‘তারপর তার প্রমোশন হয়, তারপর অ্যাম্বাসেডর হয়। এখন তার বিরুদ্ধে আবার লাগছে একদল। তারই বন্ধুবান্ধব হবে। আর না হয় পত্রিকায় এগুলো গেল কীভাবে? হি ইজ অ্যা ভেরি গুড অফিসার। আমি যদ্দিন আছি, আই উইল ডিফেন্স হিম।’

উল্লেখ্য, গত বছরের মাঝামাঝি থেকে ভিয়েনায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের পদ শূন্য। সেখানে তৌহিদুল ইসলামকে নিয়োগ দিয়ে এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব ভিয়েনায় পাঠায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

কিন্তু দেশটির সরকার তৌহিদুলকে গ্রহণ করতে রাজি হয়নি। পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর চিঠি লিখে তৌহিদুলকে গ্রহণ করতে অনুরোধ জানান। তবে লাভ হয়নি।

২০১৩ সালে ইতালির মিলানে কনসাল জেনারেল হিসেবে কর্মরত থাকাকালে মো. তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে। সেখানে এক নারী সহকর্মীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করার অভিযোগ ওঠে।

আরো পড়ুন

Ajker Patrika

Loading...
,