আশার আলো বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল
চলতি বছরের অক্টোবর মাসে চালু হতে যাচ্ছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল। কাঙ্খিত এই টার্মিনালের কাজ এপ্রিলের ৫ তারিখে শেষ হবে।
কাতারে বিভিন্ন কোম্পানিতে নতুন চাকরির খবর
এরপর টার্মিনালের দায়িত্ব বুঝে নেবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এরইমধ্যে তৃতীয় টার্মিনালের কাজ শতভাগ সম্পূন্ন করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়ামের (এডিসি) শ্রমিকরা।
দেশীয় পদ্মা ফুল আর সিঙ্গাপুরের চঙ্গি বিমানবন্দরের আদলে নির্মিত এই তৃতীয় টার্মিনাল নিয়ে আগ্রহ দেশ থেকে দেশান্তরে। প্রবাসী থেকে শুরু করে ইউরোপ, আফ্রিকায় অবস্থিত বড় বড় দেশগুলোও ফ্লাইট পরিচালনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
কাতারের সব আপডেট পেতে যুক্ত হোন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে
যা নিয়ে এরইমধ্যে এসব দেশের বিমান সংস্থাগুলো এয়ার সার্ভিস চুক্তিও করছে। ফলে অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে তৃতীয় টার্মিনাল বলে মত বিশেষজ্ঞদের। পাশাপাশি বিদেশি বিমান সংস্থাগুলোর পাশাপাশি দেশীয় বিমান সংস্থার সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি বলেও মনে করছেন তারা।
জানতে চাইলে অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞ এটিএম নজরুল ইসলাম বলেন, “দেশি বিমান সংস্থাগুলো ফ্লাইট বাড়াচ্ছে, এটা ভালো লক্ষণ। আমি মনে করি, দেশি এয়ারলাইনসগুলোর ফ্লাইট আরও বাড়ানো উচিত।”
তথ্য বলছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর তৃতীয় টার্মিনালটি আংশিক ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হয়। ২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর শুরু হয়েছিল। তৃতীয় টার্মিনাল চালুর সঙ্গে সঙ্গে শাহজালাল বিমানবন্দরে দুটি টার্মিনালের সঙ্গে আরো ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার স্থান যুক্ত হবে।
তিনতলা টার্মিনাল ভবনটিতে থাকবে ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার, ৬৬টি ডিপারচার ও ৫৯টি অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন ডেস্ক এবং তিনটি ভিআইপি ইমিগ্রেশন ডেস্ক। এছাড়াও টার্মিনালে অপারেশন, রক্ষণাবেক্ষণ এবং নিরাপত্তার জন্য ৬ হাজার দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন হবে।
বেবিচক কর্মকর্তারা জানান, তৃতীয় টার্মিনালের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য প্রায় ৪ হাজার কর্মীর প্রয়োজন হবে। যেহেতু এত লোকবল অক্টোবরের মধ্যে পাওয়া যাবে না, তাই প্রথম কয়েক মাসে টার্মিনালটি পুরোপুরি চালু নাও হতে পারে। শুরুর কয়েক মাস টার্মিনালটি পরিচালনা করবে বেবিচক ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
আগামী বছরের প্রথম দিকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক দক্ষ কর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে এবং আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে টার্মিনালটি পুরোপুরি চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইউরোপের দেশগুলোতে আগে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ফ্লাইট চালুর অনুমতি ছিলো না। ইউরোপ, আফ্রিকা অবস্থিত দেশগুলোতে ভারত হয়ে ভিসা প্রসেসিংসহ বাকি কাজ সম্পন্ন করে প্রবেশ করতে পারতেন প্রবাসীরা।
তবে তৃতীয় টার্মিনালে এসব দেশ ফ্লাইট পরিচালনায় আগ্রহ প্রকাশ করায় খুশি প্রবাসীরা। সিঙ্গাপুরের চঙ্গি বিমানবন্দরের আদলে তৈরি স্বপ্নের বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে কখন পা রাখতে পারবেন তা নিয়েও অপেক্ষা প্রহর গুণছেন অনেকেই।
তথ্যসূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের সঙ্গে এতদিন এয়ার সার্ভিস চুক্তি ছিলো মাত্র ৫৪টি দেশের। তবে বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলেই ফ্লাইট চালাতে প্রস্তুত ইথিওপিয়ান, ইরান এয়ারসহ অন্তত ১০টি বিদেশি বিমান সংস্থা।
তবে টার্মিনাল চালু হওয়ার আগেই আকাশ চলাচল বাড়াতে আগ্রহ দেখাচ্ছে ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ। করছে এয়ার সার্ভিস চুক্তিও। এ ছাড়াও ফ্রান্স, সুইস এয়ারও ফ্লাইট চালাতে আগ্রহী বলে জানান সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান।
তিনি বলেন, “বিশ্বের অনেক দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে নতুন করে রুট স্থাপন, আকাশপথে চলাচল স্থাপনের আগ্রহ প্রকাশ করছে। বর্তমানে শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে বছরে ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ যাতায়াত করলে তৃতীয় টার্মিনালে এ সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হবে।”
আরো পড়ুন-
Songbad Prokash