বিদেশ যাত্রার ওয়ান স্টপ সার্ভিস এখন অনলাইনে

এখন থেকে কোনো রিক্রুটিং এজেন্সি ছাড়াই বিদেশ যাত্রার সব প্রসেস সম্পন্ন করতে পারবেন যাত্রীরা। আর সেটিও করতে পারবেন বিএমইটিতে না গিয়ে একেবারে ঘরে বসে অনলাইনেই।

বিদেশ যাত্রার ওয়ান স্টপ সার্ভিসের এসব সেবাই মিলছে এখন অনলাইন প্লাটফর্ম আমি প্রবাসীতে।

কাতারের সব খবর হোয়াটসঅ্যাপে পেতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

এজন্য বিদেশ গমনেচ্ছুদের আর বিএমইটি অফিসে যেতে হচ্ছে না। সেইসাথে বিএমইটি ক্লিয়ারেন্সও মিলছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে।

অর্থাৎ বিএমইটিতে না গিয়েও তাদের অনলাইন প্লাটফর্ম আমি প্রবাসীর মাধ্যমেও যে কেউ নিতে পারবেন তাদের বিদেশে যাত্রার ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্সও।

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ডিজিটাল সার্ভিস প্রোভাইডার আমি প্রবাসী লিমিটেডের মাধ্যমে এই সেবা চালু করেছে বিএমইটি।

 কাতারে চাকরি খুঁজছেন? এখানে ক্লিক করুন

১০ মে তে ওয়ানস্টপ সার্ভিসের ফিচারটি যুক্ত করেছে আমি প্রবাসী কর্তৃপক্ষ। ফিচারটি চালু করার মধ্য দিয়ে পুরোপুরি ডিজিটালাইজেশনের আওতায় এলো বিএমইটি।

ফলে আগে যারা ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে কোনো এজেন্সির সহায়তা ছাড়াই বিএমইটিতে গিয়ে নিজের কাগজপত্রগুলো নিজেই পূরণ করতে পারত। এখন আর তাদের নিজের কাজগপত্রগুলো প্রসেস করার জন্য বিএমইটিতেও যেতে হচ্ছে না।

ওয়ানস্টপ সার্ভিসও এখন চলে এসেছে অনলাইনে অর্থাৎ বিএমইটির ওয়ান স্টপ সার্ভিসের সব সেবা ও কার্যক্রমের জন্য এখন থেকে আর বিএমইটিতে গিয়ে লম্বা লাইন আর সময়ক্ষেপণের বা অন্য কোনো ভোগান্তিতে না পড়ে ঘরে বসে অনলাইনেই সারতে পারবেন যে কেউ।

এজন্য বিএমইটির ডিজিটাল পার্টনার আমি প্রবাসী অ্যাপে ঢুকেই সম্পন্ন করতে পারবেন সব কার্যক্রম। এরপর শুধু বায়োমেট্রিকের জন্য যেকোনো ডেমো অফিসে যেতে হবে।

তবে, ডেমো অফিসে গিয়ে কবে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে আসবেন সেটিও আগে থেকেই বুক করতে পারবেন অনলাইনে, আমি প্রবাসীর মাধ্যমেই।

কাজের জন্য বিদেশে যেতে একজন কর্মীর দরকার হয় ইমিগ্রেশন ছাড়পত্র এবং জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর বিএমইটি স্মার্ট কার্ডের।

আর এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হয় রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে। এ জন্য একাধিক দফতরে বা জায়গায় দৌঁড়াতে হয় এজেন্সির প্রতিনিধিকেও।

মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সুইজারল্যান্ড, পর্তুগালসহ ২১টি দেশে হোয়াইট কলার জব (ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারসহ বিভিন্ন প্রফেশনাল জব ভিসা) নিয়ে যারা এসব দেশে যেতে চায় তাদের ভিসা প্রসেসিংয়ের জন্য ২০২১ সালে ওয়াস্টপ সার্ভিস চালু করে বিএমইটি।

এর মাধ্যমে ব্যক্তি উদ্যোগে ভিসা সংগ্রহকারীরা কোনো রিক্রুটিং এজেন্সির পিছে না দৌঁড়ে নিজেই তার যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারছেন।

ব্যক্তি উদ্যোগে ভিসা সংগ্রহকারীদের ভোগান্তি কামনোর আশায় দুই বছর আগে এই সার্ভিস হলেও সেবা পেতে বিদেশ গমনেচ্ছু ব্যক্তিদের দিনের পর পর দিন বিএমইটি কার্যালয়ে ঘুরতে হয়।

আবার কখনো কখনো দাঁড়াতে হয় দীর্ঘ লাইনেও। ফলে বাধ্য হয়েই অনেককে শরণাপন্ন হতে হয় কোনো রিক্রুটিং এজেন্সির কাছে। ঠিক একই চিত্র থাকছে বিএমইটি ক্লিয়ারেন্সের ক্ষেত্রেও।

সেখানেও লম্বা লাইন এবং দীর্ঘসূত্রতা ও ভোগান্তি।

আমি প্রবাসীর সিনিয়র এক্সিউটিভ আফ্রিদা নাকিবা বলেন, আগে আমি যখন রিসার্চ করেছি, তখন দেখেছি- যারা ওয়ান স্টপের মাধ্যমে বিদেশে যেতে চায়, তাদের প্রথমে বিএমইটিতে যেতে হতো, এরপর প্রায় ৫-৬ পেজের একটা ফর্ম ফিলাপ করতে হতো, তারপর বিএমইটিতে কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ভেরিফাই করার জন্য অপেক্ষা করতো হতো।

এটা একটা বিরক্তিকর হয়ে যেত সবার জন্যই। আর এখন যেটা করবে আমি প্রবাসীতে ঢুকে ওয়ানস্টপের ফিচারটিতে ক্লিক করলেই কয়েকটা ফর্ম চলে আসবে।

আমাদের যে ফরমেট দেয়া আছে সেটা পূরণ করে পেমেন্টটা করেই তারা তাদের ওয়ানস্টপ ক্লিয়ারেন্সটা সম্পন্ন করতে পারবে। শুধু তাদের কাছাকাছি যে ডেমো অফিস আছে সেখানে গিয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে আসবে।

তাহলেই তার কার্ডটা ভেরিফাই হয়ে চলে আসবে। ম্যানুয়াল সিস্টেমে যেটার জন্য অনেক সময় লাগত। বিএমইটি, ডেমো অফিসে অনেক বার যাওয়া আসা করতে হতো।

যা আসলেই অনেক বিরক্তিকর হয়ে যেত। আর এখন যেটা হয়েছে সেটা হলো ঘরে বসেই শুধু কয়েকটা ক্লিকের মাধ্যমেই তার ওয়ানস্টপ ক্লিয়ারেন্সটা হাতে পেয়ে যাচ্ছে।

বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন, পিডিও বুকিং, ট্রেইনিং সেশন বুকিংসহ বেশ কিছু সুবিধা নিয়ে আমি প্রবাসীর যাত্রা হলেও দিন দিনে যুক্ত করা হচ্ছে প্রয়োজনীয় সেবাগুলো।

এবার এই দু’টি পরিষেবা অনলাইন ক্লিয়ারেন্স এবং বিএমইটির ওয়ানস্টপ সার্ভিসকে আমি প্রবাসীতে যুক্ত করায় বিএমইটির মাধ্যমে অভিবাসন প্রক্রিয়াটি এখন শতভাগ ডিজিটাল বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির মূল উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান বাংলা ট্র্যাক গ্রুপের পরিচালক নামির আহমেদ।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী, বিএমইটি কর্তৃপক্ষ এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করে তিনি বলেন, ডিজিটাল এই সার্ভিসটির ফলে এখন বিদেশ গমনেচ্ছুদের ভোগান্তি ও হয়রানির মাত্রা শতভাগ কমে আসছে।

সেই সাথে মিডলম্যান বা দালালদের দৌড়াত্ম্য থেকেও একজন বিদেশগামী রেহাই পাবে। পাশাপাশি তার সময় এবং অর্থ দুটোরই সাশ্রয় হবে।

তিনি বলেন, আমাদের এই অ্যাপে (আমি প্রবাসী) শুধু লগইন করে আপনার ডকুমেন্টসগুলো স্ক্যান করে জমা দিতে পারবেন। এরপর আপনার পাসপোর্ট নম্বর এন্ট্রি করলেই আপনার সব তথ্য চলে আসবে।

এরপর ওয়ানস্টপ মেনুতে গিয়ে আপনি ঘরে বসেই সম্পন্ন করতে পারবেন যাবতীয় কার্যক্রম। বিএমইটি কার্যালয়ে না গিয়ে মাত্র ৪ থেকে ৫ মিনিটের মধ্যেই এপ্লিকেশনটি সম্পন্ন করতে পারবেন।

শুধু একদিন কাছের কোনো ডেমো অফিসে গিয়ে বায়োমেট্রিক করে আসতে হবে। আর বায়োমেট্রিকের তারিখটিও অনলাইনে নিতে পারবেন কখন যাবেন।

তিনি আরো বলেন, আবেদনে ভিসা, মেডিক্যাল সার্টিফিকেট যা যা লাগে সেসবের সমন্বয় করা যাবে। এ জন্য ৪ থেকে ৫ মিনিট লাগবে এপ্লিকেশনটি সম্পন্ন করতে।

ফাইলটি কোথায় কোন সেকশনের কোন কর্মকর্তার কাছে আছে তাও জানা যাবে। চাইলে ওই কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে ফলোআপও করা যাবে।

আরো পড়ুন

NayaDiganta

Loading...
,