মাত্র ৪৬ শতাংশ জনবলে ২২ হাজার যাত্রীকে সেবা

ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে ব্যবহার করে অভ্যন্তরীন ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী আড়াই’শ ফ্লাইট প্রতিদিন উঠানামা করছে।

কাতারে বিভিন্ন কোম্পানিতে নতুন চাকরির খবর

বর্তমানে ৪৬ শতাংশ জনবল দিয়ে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংসহ যাত্রী সেবার মান নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে নতুন জনবল ট্রাফিক বিভাগে যোগ হলে যাত্রী সেবার মান আরো বাড়বে বলে মনে করছেন বিমানবন্দর টার্মিনাল সংশ্লিষ্টরা।

ইতোমধ্যে যাত্রী সেবার মান বাড়ানোর লক্ষ্যে ফ্রান্স/জার্মানী থেকে টো মেশিনসহ অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি চলে এসেছে। আরো কিছু ইকুইপমেন্ট আসার কথা রয়েছে।

গতকাল হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনালের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে বলেন, বর্তমানে আমাদের বিমানবন্দরে যাত্রী সেবার মান বাড়ানোর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে কঠোর মনিটরিং করা হচ্ছে।

কাতারের সব আপডেট পেতে যুক্ত হোন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে

এর ফলে প্রতিদিন ঢাকা থেকে অভ্যন্তরীন ৭টি ও সৌদি, দুবাই, লন্ডনসহ আন্তর্জাতিক রুটগুলোতে বেশির ভাগ সময় অনটাইমে ফ্লাইটগুলো ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছে। যাত্রীদের পাশাপাশি তাদের ব্যাগেজ ডেলিভারীও যথাসময়ে দেয়া হচ্ছে। বলা যায়, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সার্ভিস সিস্টেমের কার্যক্রম অনেকটা সন্তোষজনক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে (১৯৭২) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনালে দেশী-বিদেশী এয়ারলাইন্স উঠানামা ও যাত্রীদের গ্রাউন্ড ইকুইপমেন্ট সার্ভিস দিয়ে আসছে।

চলতি বছরের অক্টোবর মাসে শাহজালাল বিমানবন্দরে আংশিক উদ্বোধন হওয়া থার্ড টার্মিনালেও পুরোদমে চালু হতে যাচ্ছে। এই টার্মিনালে আন্তর্জাতিকমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা দেয়ার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের রয়েছে অভিজ্ঞ কর্মী ও আধুনিকমানের যন্ত্রপাতি।

শুধু তাই নয়, অসামান্য গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সার্ভিস দেয়ার জন্য ইতোমধ্যে ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন (আয়াটা) থেকে নিবন্ধন ও স্বীকৃতির প্রশংসাপত্রও পেয়েছে সংস্থাটি।

গতকাল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বলাকা ভবনসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ম্যানেজমেন্ট ঠিক থাকলে বিমানের ফ্লাইট পরিচালনাও ঠিকঠাক হয়ে যায়।

তার মতে, আগে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল নিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেলেও এখন তা অনেকটা কমেছে। এখন যাত্রীদের চাহিদামতো বোর্ডিং পাশ থেকে শুরু করে সব ধরনের সেবা দেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রতিদিন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও বিদেশী এয়ারলাইন্সের ১৮০-১৯০টির মতো ফ্লাইট উঠানামা করছে। এর সাথে বেসরকারি সংস্থা ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের আরো ৬০টি (আসা-যাওয়া) ফ্লাইট উঠানামা করছে। সব মিলিয়ে গড়ে প্রতিদিন আড়াই’শ ফ্লাইট ঢাকা থেকে একটি মাত্র রানওয়ে ব্যবহার করে উঠানামা করছে।

এসব ফ্লাইটে ১৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২২ হাজার পর্যন্ত যাত্রী ট্রাভেল করছেন। বিপুল পরিমাণ যাত্রীকে বর্তমানে সেবা দিতে আমাদের রয়েছে মাত্র ৪৬% জনবল। তার পরও আমরা ওভারটাইম, অতিরিক্ত টিএ ডিএ বিল দিয়ে যাত্রী সেবার মান ধরে রাখছি।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে যাত্রী সেবার মান বাড়াতে আমাদের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সার্ভিস সিস্টেমের জন্য অতিরিক্ত দুই শত জনবল নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এক’শ জনের নিয়োগ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ভাইভার পরই তারা যোগ দেবেন। বাকিদের কার্যক্রমও চলমান রয়েছে। তাহলে আর জনবল সঙ্কট থাকবে না।

গতকাল শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (গ্রাহক সেবা)) মো: মতিউল ইসলাম চৌধুরীর সাথে এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

এর আগে গত ৪ জানুয়ারি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিমানবন্দরে বিমান জিএসই বিভাগের মাধ্যমে গ্রাউন্ড সাপোর্ট ইক্যুইমেন্টগুলোর প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শফিউল আজিম (অতিরিক্ত সচিব)।

বিশেষ অতিথি ছিলেন হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম। এতে সভাপতিত্ব করেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (গ্রাহক সেবা) মো: মতিউল ইসলাম চৌধুরী (যুগ্ম সচিব)।

অনুষ্ঠানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ১৯ ধরনের মটোরাইজড ইক্যুইপমেন্ট এবং ৭ ধরনের নন-মটোরাইজড ইক্যুইপমেন্ট প্রদর্শন করা হয় এবং বিমান বহরে নতুন সংযুক্ত ৪টি ফর্ক লিফট ও ৫টি র‌্যাম্প কোচের কমিশনিং করা হয়।

এ ছাড়াও বিমান গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ে সম্পৃক্ত নিরাপত্তা কর্মীদের জন্য নতুন ক্রয়কৃত বডি ক্যামেরা এবং গ্রাউন্ড স্টাফদের জন্য নতুন ক্রয় করা রেডিও টেলিফোন (আরটি) প্রদর্শন করা হয়।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক মো: মতিউল ইসলাম চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৩০টি প্যাসেঞ্জার এয়ারলাইন্স এবং ১২টি কার্গো ফ্রেইটার এ গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং প্রদান করা হচ্ছে। বিমান জিএসই বিভাগের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা আগের থেকে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজিম বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই এ দেশের সব বিমানবন্দরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা প্রদান করছে।

বিগত বছরে বিমান জিএসই বিভাগের জন্য মানসম্মত গ্রাউন্ড সাপোর্ট ইক্যুইপমেন্ট ক্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেগুলো পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দক্ষ জনবল নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।

আগামী কয়েক মাসে বিমান জিএসই বহরে ১০০টির বেশী উন্নত প্রযুক্তির গ্রাউন্ড সাপোর্ট ইক্যইপমেন্ট যুক্ত হবে, এতে বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে।

আরো পড়ুন-

নয়াদিগন্ত

Loading...
,