বাংলাদেশে যে কারণে ফ্লাইট কমিয়ে দিচ্ছে কিছু বিদেশি এয়ারলাইনস

বাংলাদেশ থেকে বিদেশে শ্রমিক প্রেরণ, ওমরাহ, চিকিৎসা ও প্যাকেজ ট্যুরের যাত্রীর সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকলেও চলমান সঙ্কটে বিদেশী এয়ারলাইন্সগুলো বাংলাদেশ থেকে তাদের ফ্লাইটের সংখ্যা কমিয়ে আনছে।

ফ্লাইট ফ্রিকোয়েন্সি কমানোর ফলে এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়ন ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে এ ব্যবসার সাথে জড়িতরা বলছেন, এয়ারলাইন্সগুলো সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে বাংলাদেশের পরিবর্তে যেসব গন্তব্য বেশি মুনাফা সেখানে তারা ফ্লাইট চালাতে আগ্রহী হচ্ছে।

কাতারের সব খবর হোয়াটসঅ্যাপে পেতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

এভাবে চলতে থাকলে আগামী ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে বিদেশী এয়ারলাইন্সগুলোর ফ্লাইট অপারেশনের সংখ্যা শতকরা ৬০ ভাগ কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে আটাবসহ এভিয়েশন সংশ্লিষ্টরা।

বিদেশী এয়ারলাইন্সগুলোর প্রতিনিধিরা জানিয়েছে, এয়ারলাইন্সগুলো যখন টিকিট বিক্রি করে প্রতি ডলারের বিপরীতে, তখন টাকার মান থাকে ৮৫ থেকে ৯৯ টাকা।

কিন্তু রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে টাকার মান হয়ে যায় ১১৫ থেকে ১২০ টাকা। এর ফলে রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে এয়ারলাইন্সগুলো ১৫-২০ ভাগ ক্ষতির সম্মুখীন হয়।

কাতারে চাকরি খুঁজছেন? এখানে ক্লিক করুন

এ কারণে বিদেশী এয়ারলাইন্সগুলো বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা করার বিষয়ে অনাগ্রহী হচ্ছে না বলে আটাবসহ সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইট পরিচালনাকারী প্রায় সব ক’টি বিদেশী এয়ারলাইন্স তাদের টিকিট বিক্রি বাবদ বিক্রয়লব্ধ অর্থ বাংলাদেশী মুদ্রায় ব্যাংকে জমা থাকা সত্ত্বেও নিজ নিজ দেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।

এর মধ্যে ২০২২ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৯ মাস ধরে এয়ারলাইন্সগুলোর রেমিট্যান্স প্রেরণ বন্ধ রয়েছে।

উপরন্তু তাদের এয়ারক্রাফটে রিফুয়েলিংয়ের সময় বাংলাদেশ থেকে যে জ্বালানি ক্রয় করছে তার মূল্য ইনওয়ার্ড রেমিট্যান্সের মাধ্যমে ডলার এনে পরিশোধ করতে হচ্ছে।

অথচ বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে তাদের পাওনা টাকা জমা রয়েছে। তাদের ব্যাংকের টাকা বিভিন্ন জটিলতায় বাংলাদেশে প্রেরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

এ অবস্থায় বিদেশী এয়ারলাইন্সগুলো বাংলাদেশে টিকিট বিক্রয় ও ফ্লাইট পরিচালনায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে বলে এয়ারলাইন্স প্রতিনিধিরা আটাব কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে টার্কিশ এয়ারলাইন্স সপ্তাহে ১৪টি ফ্লাইট পরিচালনা করত। সেখান থেকে তারা কমিয়ে পাঁচটি চালাচ্ছে।

একইভাবে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স ১০টি থেকে কমিয়ে সাতটি এবং ক্যাথে প্যাসিফিক পাঁচটির পরিবর্তে একটি ফ্লাইট অপারেট করছে।

একইভাবে জাজিরা, মালিন্দো, কুয়েত এয়ারলাইন্সসহ আরো অনেক এয়ারলাইন্স ইতোমধ্যে তাদের ফ্লাইট পরিচালনার সংখ্যা কমিয়ে আনছে।

ট্রাভেল এজেন্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, এভাবে ফ্লাইটের সংখ্যা কমতে থাকলে এভিয়েশন ব্যবসা ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে।

বিশেষ করে পর্যটন শিল্পের অন্যতম চালিকা শক্তি ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসায় ধস নেমেছে। ইতোমধ্যে ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর টিকিট বিক্রি কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে এবং এজেন্সিগুলো বন্ধের উপক্রম হয়েছে।

এভাবে চলতে থাকলে এই শিল্পের সাথে দুই লাখ লোক কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে আটাব মহাসচিব মনে করছেন।

তাই বিদেশী এয়ারলাইন্সগুলোর রেমিট্যান্স প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত না করে স্বাভাবিক ফ্লাইট পরিচালনায় উৎসাহিত করে চলমান এবং ভবিষ্যৎ সঙ্কট থেকে উত্তরণের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আটাবের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়।

আরো পড়ুন

গালফ বাংলা

Loading...
,