সুদানফেরত প্রবাসীদের প্রত্যাবাসনে ২ লাখ ডলারের তহবিল: মন্ত্রী

সংঘাতপূর্ণ সুদান থেকে বাংলাদেশি প্রবাসীদের ফিরিয়ে আনার ব্যয় মেটানোর জন্য ২ লাখ ডলারের তহবিল অনুমোদন নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।

এসব প্রবাসীর জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে একটি নীতিমালা করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

কাতারের সব খবর হোয়াটসঅ্যাপে পেতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

সোমবার (০৮ মে) ভোরে জেদ্দা থেকে রওনা হয়ে বেলা সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান সুদানফেরত ১৩৬ বাংলাদেশি প্রবাসী।

বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানান প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ। এ সময় সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, পরর্তীতে সুদানের অবস্থা ভালো হলে আপনারা আবার যেতে পারবেন। এর বিকল্প হিসেবে অন্য কোনো দেশে যদি যাওয়ার ব্যবস্থা হয় তাহলে আমরা সেইভাবে ব্যবস্থা করব।

আপনাদের পুনর্বাসনের জন্য আমাদের প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক আছে। আমরা একটা নীতিমালা ঠিক করে দিলে আপনারা ওখান থেকেও সাহায্য নিতে পারবেন।

মন্ত্রী জানান, সুদান ফেরত প্রত্যেককে এখন পর্যন্ত তিন হাজার টাকা নগদ অর্থ দিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ বোর্ড৷ ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওম) থেকে দেওয়া হয়েছে দুই হাজার টাকা ও খাদ্য সহায়তা।

 কাতারে চাকরি খুঁজছেন? এখানে ক্লিক করুন

মন্ত্রী আরও জানান, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে সুদানে আটকা পড়া বাংলাদেশিদের ফেরাতে দুই লাখ ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আপনারা আশ্বস্ত হতে পারেন যে, অতিসত্বর বাকিদের নিয়ে আসব। ৯ বা ১০ তারিখ আরেকটা ফ্লাইট আসবে।

আমরা চেষ্টা করছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিয়ে আসার। আজকে আসার কথা ছিল ২৫০ জন কিন্তু শেষ পযন্ত এলো ১৩৬ জন। সেজন্য নির্দিষ্ট সংখ্যা বা তারিখ বলাটা কঠিন।

তিনি আরও বলেন, এই প্রবাসীরা সবকিছু হারিয়েছেন। কিন্তু এ হারানোর আগে দেশকে অনেককিছু দিয়েছেন। এরা সবাই খালি হাতে এসেছেন। কিভাবে তাদের সাহায্য করা করা যায় সেটার জন্য আমরা এখানে এসেছি।

আইওএম এদের সর্বত্র সহায়তা করছে। ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে সবাইকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে, যেন এ কয়দিন তারা চলতে পারেন। আমরা চেষ্টা করছি তাদের অসুবিধাটা যতটুকু লাঘব করা যায়।

সুদানফেরতদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা এখানে খালি হাতে এসেছেন, এই মুহূর্তে আপনাদেরকে কী সাহায্য করা যায় এটার জন্য আমরা এখানে জড়ো হয়েছি।

আপনাদের আসার পেছনে আমরা যদি প্রথম থেকে ধরি তাহলে সুদানে খার্তুমে আমাদের দূতাবাস, জেদ্দাতে আমাদের শ্রম কল্যাণ উইংয়ের যারা আছেন- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকায় আমাদের বিমান কর্তৃপক্ষ, সিভিল অ্যাভিয়েশন এবং প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এই সবকিছুর সমন্বয় করে আমরা এই জায়গায় আসতে পেরেছি। আমার বিশ্বাস বাকি যারা ওখানে আছেন তাদের আমরা অতিসত্বর এখানে নিয়ে আসতে পারব।

দূতাবাস থেকে সুদান প্রবাসীরা যথাযথ সহায়তা পাননি এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ওখানে যারা আমাদের দূতাবাসের আছেন তারা কিন্তু স্বস্তিতে নেই।

এখানে আপনারা যারা আছেন তারা কিছুটা হলেও টের পেয়েছেন। সবসময় দোষ খোঁজার চেষ্টা করবেন না। এটা কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থা। এর মধ্যেই আমরা চেষ্টা করেছি সবাইকে নিয়ে আসতে।

প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, আমি আপনাদের অনুরোধ করব আপনারা এখানে নাম-ঠিকানা রেজিস্ট্রেশন করবেন যাতে ভবিষ্যতে আপনাদের আমরা সাহায্য-সহযোগিতা করতে পারি।

আগামীতে কীভাবে কী করবো তাতে যেন আমরা সরাসরি যোগাযোগ করতে পারি। আমাদের কল্যাণ বোর্ড থেকে প্রবাসীদের প্রত্যাবাসনের জন্য ২ লাখ ডলার অনুমোদন দিয়ে রাখা হয়েছে।

এর আগে, ৩ সপ্তাহ ধরে সংঘাতকবলিত সুদান থেকে ১৩৬ জন বাংলাদেশি নাগরিক সৌদি এয়ারফোর্সের বিশেষ তিনটি বিমানে রোববার (০৭ মে) জেদ্দায় পৌঁছান।

সৌদি এয়ারফোর্সের দুটি বিমানে দুপুরে মোট জেদ্দা পৌঁছান ৭০ জন বাংলাদেশি। বিকেলে আরও একটি বিমানে ৬৫ জন বাংলাদেশি সুদান থেকে জেদ্দায় পৌঁছেন।

সুদান থেকে আসা এই বাংলাদেশিদের জেদ্দা বিমানবন্দরে স্বাগত জানান সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার)।

এ সময় জেদ্দার বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হক উপস্থিত ছিলেন।

এই বাংলাদেশিদের জেদ্দা বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ইংরেজি সেকশনে বিশ্রাম, খাবার ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সেখানে বাংলাদেশ দূতাবাস ও জেদ্দার বাংলাদেশ কনস্যুলেট সবরকম সহায়তা দিচ্ছে।

সুদানে প্রায় এক হাজার পাঁচশ বাংলাদেশি নাগরিক বসবাস করেন। এর মধ্যে যারা দেশে আসার জন্য নিবন্ধন করেছেন, পর্যায়ক্রমে সবাইকে ফিরিয়ে আনা হবে।

সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস ও জেদ্দার বাংলাদেশ কনস্যুলেট এ বিষয়ে সব প্রস্তুতি নিয়েছে।

আরো পড়ুন

BanglaNews24

Loading...
,