দোহায় অবস্থানের জন্য হামাসকে যে শর্ত দিলো কাতার

গাজায় উপত্যকায় যুদ্ধাবসানের জন্য হামাস যদি কার্যকর ভূমিকা পালনের প্রতিশ্রুতি দেয় এবং তা পালন করে, কেবল তাহলেই সশস্ত্র এই রাজনৈতিক গোষ্ঠীর নেতারা কাতারে অবস্থান করতে পারবেন।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল আনসারি মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ ইস্যুতে দোহার অবস্থান স্পষ্ট করে বক্তব্য দিয়েছেন।

কাতারে বিভিন্ন কোম্পানিতে নতুন চাকরির খবর

সংবাদ সম্মেলনে মাজেদ আল আনসারি বলেন, ‘আমরা গাজা উপত্যকায় যুদ্ধাবসানের জন্য তৎপরতা অব্যাহত রেখেছি। এই তৎপরতায় হামাসের ভূমিকা যদি ইতিবাচক এবং কার্যকর হয়, কেবল তাহলেই গোষ্ঠীটির নেতারা দোহায় অবস্থান করতে পারবেন।’

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্টের অনুমোদনক্রমে ২০১২ সাল থেকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতাদের আতিথ্য প্রদান করে আসছে কাতার। গত ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ বাঁধার পর থেকে যে তিন দেশ দু’পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতার ভূমিকায় রয়েছে— তাদের মধ্যে কাতার অন্যতম। বাকি দুটি দেশ হলো মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র।

কাতারের সব আপডেট পেতে যুক্ত হোন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে

গত ৭ অক্টোবর গাজার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ঢুকে নির্বিচারের গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিককে হত্যা করে হামাস। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় আরও ২৪০ জনকে।

জবাবে সেই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। গত ছয় মাস ধরে চলমান সেই অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, নিহত হয়েছেন ৩৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিহতদের অধিকাংশই শিশু, নারী ও বেসামরিক লোকজন।

কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতা-দূতিয়ালিতে গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অস্থায়ী বিরতি ঘোষণা করেছিল হামাস-আইডিএফ। সেই বিরতির সময় নিজেদের কব্জায় থাকা জিম্মিদের মধ্যে ১০৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে থেকে ১৫০ জনকে কারাগার থেকে ছেড়ে দিয়েছিল ইসরায়েলও।

ওই বিরতি শেষ হওয়ার পর গাজায় দ্বিতীয় দফা যুদ্ধবিরতির জন্য কাজ করছিল মধ্যস্থতাকারী তিন দেশ। চলতি বছর রমজান মাস থেকে তা শুরু হওয়ার কথা ছিল।

যুদ্ধবিরতির খসড়া প্রস্তাব হামাসকে প্রদানের পর গোষ্ঠীটির নেতারা কয়েকটি নতুন শর্ত তাতে সংযুক্ত করেন। তবে সেসব শর্ত বাস্তবসম্মত নয় বলে প্রস্তাবটি বাতিল করে দেয় ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা।

মূলত তারপর থেকেই হামাস এবং দোহার মধ্যে জটিলতা শুরু হয়। গত সপ্তাহে কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান বিন জসিম আল থানি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন— হামাস-ইসরায়েল ইস্যুতে নিজেদের ভূমিকা পুর্ণমূল্যায়ন করছে কাতার।

তারপর থেকেই এই গুঞ্জন ওঠে যে হামাস নেতাদের কাতার থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিতে পারে দোহা।

মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাজেদ আল আনসারি বলেন, ‘আমরা এখন (ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে) আমাদের অবস্থান পুর্ণমূল্যায়ন করছি। এই পর্যায় শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত এ ইস্যুতে কোনো সিদ্ধান্ত আমরা নেবো না।’

DhakaPost

Loading...
,