রেমিট্যান্সের পর রপ্তানি আয়েও নিম্নগতি

ফেব্রুয়ারি মাসে ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ৬০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা; যা চার মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। একইভাবে ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানি আয় নেমে এসেছে চার দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলারে, যা আগের তিন মাসের তুলনায় সবচেয়ে কম।

কাতারে চাকরি খুঁজছেন? এখানে ক্লিক করুন

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের মতো রপ্তানি আয়েও নিম্নগতি। সদ্য শেষ হওয়া ফেব্রুয়ারিতে বিগত চার মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম রেমিট্যান্স এসেছে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের আরেক বড় খাত রপ্তানি আয়েও দেখা দিয়েছে তেমন ধারা।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও টানা তিন মাস পাঁচ বিলিয়ন ডলারের বেশি রপ্তানি আয় দেশে এসেছিল। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসে তা কমে নেমে এসেছে চার দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলারে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ কম।

কাতারের সব খবর হোয়াটসঅ্যাপে পেতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

সবশেষ চার মাসের মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে সর্বনিম্ন হলেও অবশ্য গত বছরের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি আয় বেড়েছে ৭ দশমিক ৮১ শতাংশ। সে সময় পণ্য বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে ৪ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার দেশে আনেন রপ্তানিকারকরা।

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে পণ্য রপ্তানি থেকে ৩ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার এসেছিল দেশে। আগস্টে আসে ৪ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার।

সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে আসে তা ছিল যথাক্রমে ৩ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ও ৪ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার। এরপর নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রপ্তানি আয় ছিল যথাক্রমে ৫ দশমিক ১০, ৫ দশমিক ৩৬ ও ৫ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো বৃহস্পতিবার রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) বিভিন্ন দেশে পণ্য রপ্তানি করে মোট ৩৭ দশমিক শূন্য সাত বিলিয়ন ডলারের বিদেশি মুদ্রা দেশে এনেছেন রপ্তানিকারকরা।

এই পরিমাণ গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি। অবশ্য তারপরও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। ৩৭ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অর্জন হয় শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ কম।

গত ২০২১-২২ অর্থবছরের এই আট মাসে ৩৩ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয় দেশে এসেছিল।

ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে মোট রপ্তানি আয়ের ৩১ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার বা ৮৪ দশমিক ৫৮ শতাংশই এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে।

দেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভের প্রধান দুই উৎস হচ্ছে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স। রপ্তানি আয়ের মতো ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্সেও ছিল নিম্ন গতি।

বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স প্রবাহের যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, ফেব্রুয়ারিতে ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ৬০ হাজার ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা; যা চার মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম।

তবে রপ্তানি আয়ের মতোই ফেব্রুয়ারিতে দেশে আসা রেমিট্যান্স গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেশি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ১৪৯ কোটি ৪৪ লাখ ডলার।

এর আগে গত ২০২১-২২ অর্থবছরে দুই হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক শূন্য তিন বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা ছিল আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ কম।

রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের এই ধীরগতির কারণে রিজার্ভ আরও কমেছে। বৃহস্পতিবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩২ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের ১ মার্চ রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪৬ বিলিয়ন ডলার।

এদিকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) নভেম্বর-ডিসেম্বর মেয়াদের ১ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে ৩২ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছিল। তার আগে ছিল প্রায় ৩৪ বিলিয়ন ডলার।

আগামী সপ্তাহেই আকুর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের ১ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধ করতে হবে। তখন রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে আসবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

আরো পড়ুন

Loading...
,